গাড়ির অয়েল কত প্রকার এবং কোনটি আপনার গাড়ির জন্য সেরা

গাড়ির অয়েল কত প্রকার এবং কোনটি আপনার গাড়ির জন্য সেরা ।। Best Suggestion

গাড়ির অয়েল কত প্রকার এবং কোনটি আপনার গাড়ির জন্য সেরা:  জানুন ইঞ্জিন, ট্রান্সমিশন, ব্রেক এবং অন্যান্য তেলের গুরুত্বপূর্ণ প্রকারভেদ ও সঠিক ব্যবহারের উপকারিতা। গাড়ির যত্নে সঠিক অয়েল নির্বাচন করুন।

গাড়ির অয়েল কত প্রকার এবং কোনটি আপনার গাড়ির জন্য সেরা

গাড়ি চলাচলের জন্য তেল একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা গাড়ির যন্ত্রাংশের জীবনকাল বাড়ায় এবং কর্মক্ষমতা বজায় রাখে। অনেকেই জানেন না যে, গাড়ির বিভিন্ন অংশের জন্য আলাদা ধরনের তেল প্রয়োজন হয়।

গাড়ির অয়েল কত প্রকার এবং কোনটি আপনার গাড়ির জন্য সেরা

 

যেমন ইঞ্জিন তেল, ট্রান্সমিশন তেল, ব্রেক তেল, পাওয়ার স্টিয়ারিং তেল এবং ডিফারেনশিয়াল তেল। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানব গাড়ির অয়েল কত প্রকার এবং প্রতিটি তেলের কাজ ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত। এ আর্টিকেলটি পড়ে আপনি সহজেই জানতে পারবেন কোন তেল কেন গুরুত্বপূর্ণ এবং কখন পরিবর্তন করতে হবে।

গাড়ির অয়েলের গুরুত্ব

গাড়ির অয়েল শুধু জ্বালানির কাজই করে না, বরং এটি গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশকে সচল ও কার্যক্ষম রাখে। গাড়ির অয়েল সঠিক পরিমাণে না থাকলে বা সঠিক সময়ে পরিবর্তন না করা হলে ইঞ্জিনের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে এবং ক্ষতি হতে পারে।

এছাড়াও অয়েল ব্যবহারের মাধ্যমে যন্ত্রাংশের ঘর্ষণ কমে, যা গাড়ির কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই গাড়ির অয়েল সম্পর্কে সচেতনতা থাকা এবং সঠিকভাবে ব্যবহার করা গাড়ির দীর্ঘস্থায়ী কার্যক্ষমতার জন্য অপরিহার্য।

গাড়ির অয়েলের প্রকারভেদ

গাড়ির অয়েল কত প্রকার এ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আমরা বিভিন্ন ধরনের অয়েল সম্পর্কে জানব। এই তেলগুলো গাড়ির বিভিন্ন অংশের জন্য বিশেষায়িত এবং প্রতিটি তেলের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও ব্যবহার আছে। আসুন জানি গাড়ির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তেল সম্পর্কে:

ইঞ্জিন অয়েল

ইঞ্জিন অয়েল গাড়ির ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা এবং স্থায়িত্ব বাড়াতে সাহায্য করে। ইঞ্জিনের ঘর্ষণ কমানো, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা এবং ধূলিকণা অপসারণে ইঞ্জিন অয়েল বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ইঞ্জিন অয়েল তিন ধরনের হতে পারে:

  • সিন্থেটিক অয়েল: এটি রাসায়নিকভাবে তৈরি হয় এবং সাধারণত উচ্চ কর্মক্ষমতার জন্য ব্যবহৃত হয়। সিন্থেটিক অয়েল তাপমাত্রা পরিবর্তনের সময়ও স্থিতিশীল থাকে।
  • সেমি-সিন্থেটিক অয়েল: এটি মিনারেল ও সিন্থেটিক অয়েলের মিশ্রণ। মাঝারি মানের গাড়ির জন্য এটি বেশ উপযোগী।
  • মিনারেল অয়েল: এটি প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত এবং সাধারণত কম খরচে ব্যবহৃত হয়।

ট্রান্সমিশন অয়েল

ট্রান্সমিশন অয়েল গিয়ারবক্স বা গিয়ার সিস্টেমে ব্যবহৃত হয়। এটি গিয়ারের ঘর্ষণ কমায় এবং সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। সাধারণত ট্রান্সমিশন অয়েল দুই ধরনের হয়:

  • অটোমেটিক ট্রান্সমিশন ফ্লুইড (ATF): এটি অটোমেটিক গাড়িতে ব্যবহৃত হয় এবং অটোমেটিক গিয়ারের জন্য উপযোগী।
  • ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন অয়েল (MTF): ম্যানুয়াল গিয়ার সিস্টেমে ব্যবহৃত হয় এবং উচ্চ তাপমাত্রায় কার্যকরী থাকে।

ব্রেক অয়েল

ব্রেক অয়েল ব্রেকিং সিস্টেমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি হাইড্রোলিক চাপ ধরে রাখে এবং ব্রেকিং প্রক্রিয়াকে কার্যকরী রাখে। ব্রেক অয়েল DOT (ডিপার্টমেন্ট অফ ট্রান্সপোর্টেশন) গ্রেডে তৈরি হয়, যেমন DOT3, DOT4 ইত্যাদি। প্রতিটি গ্রেডে হাইড্রোলিক কর্মক্ষমতা ও তাপমাত্রা প্রতিরোধ ক্ষমতা ভিন্ন।

আরও পড়ুন: আকিজ মোটরসাইকেল প্রাইস ইন বাংলাদেশ ২০২৪

পাওয়ার স্টিয়ারিং অয়েল

পাওয়ার স্টিয়ারিং অয়েল স্টিয়ারিং সিস্টেমের গতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং স্টিয়ারিং হালকা করতে সাহায্য করে। এই তেল সঠিকভাবে ব্যবহার করা না হলে স্টিয়ারিং কন্ট্রোল হারানোর ঝুঁকি থাকে। তাই প্রতি নির্দিষ্ট সময় পর পর এটি পরীক্ষা করা উচিত।

ডিফারেনশিয়াল অয়েল

ডিফারেনশিয়াল অয়েল চার চাকা গাড়ির জন্য বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি ডিফারেনশিয়াল গিয়ারকে সুরক্ষা দেয় এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ডিফারেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার না করলে গিয়ারে ঘর্ষণ বৃদ্ধি পায়, যা গাড়ির স্থায়িত্বে প্রভাব ফেলে।

কোন অয়েল কখন পরিবর্তন করবেন?

গাড়ির প্রতিটি তেলের নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরিবর্তন করা উচিত। প্রতিটি তেলের পরিবর্তনের সময়সীমা গাড়ির ম্যানুয়ালে উল্লেখ থাকে। সাধারণত:

গাড়ির অয়েল কত প্রকার এবং কোনটি আপনার গাড়ির জন্য সেরা

 

  • ইঞ্জিন অয়েল: প্রতি ৫,০০০ থেকে ৭,০০০ কিমি পরে।
  • ট্রান্সমিশন অয়েল: প্রতি ৩০,০০০ থেকে ৬০,০০০ কিমি পরে।
  • ব্রেক অয়েল: প্রতি দুই বছরে বা ২০,০০০ কিমি পরে।
  • পাওয়ার স্টিয়ারিং অয়েল: প্রতি ৫০,০০০ কিমি পরে।
  • ডিফারেনশিয়াল অয়েল: প্রতি ৫০,০০০ থেকে ৭০,০০০ কিমি পরে।

আরও পড়ুন: কম দামে গাড়ি কোথায় পাওয়া যায় 

বাজারে পাওয়া যায় এমন কিছু জনপ্রিয় ব্র্যান্ড

বিভিন্ন ধরনের তেলের জন্য বেশ কিছু বিখ্যাত ব্র্যান্ড বাজারে পাওয়া যায়। যেমন:

  • ইঞ্জিন অয়েলের জন্য: Shell, Mobil, Castrol, Total
  • ট্রান্সমিশন অয়েলের জন্য: Valvoline, Red Line, AMSOIL
  • ব্রেক অয়েলের জন্য: Bosch, ATE, Castrol

FAQ

১. গাড়ির অয়েল কতদিন পরপর পরিবর্তন করতে হয়?

গাড়ির প্রতিটি তেল নির্দিষ্ট কিমি পর বা নির্দিষ্ট সময় পরপর পরিবর্তন করা উচিত। যেমন, ইঞ্জিন অয়েল সাধারণত ৫,০০০ থেকে ৭,০০০ কিমি পর পরিবর্তন করা প্রয়োজন।

২. গাড়ির জন্য কোন ধরনের অয়েল সবচেয়ে ভালো?

গাড়ির মডেল ও ইঞ্জিনের প্রয়োজন অনুসারে তেল বাছাই করা উচিত। সাধারণত উচ্চ কর্মক্ষমতার জন্য সিন্থেটিক অয়েল উপযোগী হতে পারে।

৩. কোন কোন লক্ষণ দেখলে অয়েল পরিবর্তন করা উচিত?

যদি অয়েলের রঙ গাঢ় হয়ে যায়, গাড়ি চলার সময় অস্বাভাবিক শব্দ হয় বা ইঞ্জিনের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, তবে অয়েল পরিবর্তন করার সময় হয়েছে।

৪. গাড়ির তেলের মান নিয়মিত পরীক্ষা করার পদ্ধতি কী?

ডিপস্টিক ব্যবহার করে তেলের পরিমাণ ও রঙ পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।

৫. নতুন গাড়িতে প্রথমবার অয়েল পরিবর্তন করতে কতদিন অপেক্ষা করতে হয়?

সাধারণত প্রথম ৫,০০০ কিমি পরে প্রথমবার অয়েল পরিবর্তন করা উচিত।

উপসংহার

গাড়ির অয়েল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা গাড়ির কর্মক্ষমতা, স্থায়িত্ব এবং দীর্ঘস্থায়ী কার্যকারিতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। গাড়ির বিভিন্ন অংশের জন্য আলাদা ধরনের অয়েল প্রয়োজন, এবং সঠিক সময়ে সঠিক অয়েল পরিবর্তন করা গাড়ির ইঞ্জিন এবং অন্যান্য যন্ত্রাংশের জীবনকাল বাড়ায়।

গাড়ির অয়েল কত প্রকার এবং কোনটি আপনার গাড়ির জন্য সেরা

 

এই আর্টিকেলে আমরা গাড়ির অয়েল কত প্রকার এবং প্রতিটি তেলের বিশেষত্ব ও ব্যবহারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করেছি, যা আপনাকে আপনার গাড়ির জন্য সেরা অয়েল নির্বাচন করতে সহায়ক হবে।

Published by

মোঃ ইব্রাহিম (প্রতিষ্ঠা পরিচালক)

আর. এস ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার ২ || দক্ষ ড্রাইভার তৈরিতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। মোবাইলঃ ০১৬৭৫-৫৬৫ ২২২ অফিস ঠিকানাঃ হাউজ-১৫৪/এ, রোড-০২, ব্লক-এ, সেকশন-১২, পল্লবী মিরপুর ঢাকা-১২১৬।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

01675565222
লাইভ চ্যাট
Exit mobile version