Car Accessorie

গাড়ির হেড গ্যাসকিট নষ্ট হলে ইঞ্জিনে কী হয়: লক্ষণ, কারণ ও প্রতিকার

গাড়ির হেড গ্যাসকিট নষ্ট হলে ইঞ্জিনে কী হয়: গাড়ির হেড গ্যাসকিট ইঞ্জিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা সিলিন্ডার হেড এবং ইঞ্জিন ব্লকের মধ্যে একটি সিল তৈরি করে। এই সিলটি ইঞ্জিনের কম্প্রেশন বজায় রাখে এবং কুল্যান্ট ও ইঞ্জিন অয়েলকে আলাদা রাখে। যখন হেড গ্যাসকিট নষ্ট হয়, তখন ইঞ্জিনে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা হ্রাস করে এবং বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে।

গাড়ির হেড গ্যাসকিট নষ্ট হলে ইঞ্জিনে কী হয়

 

গাড়ির হেড গ্যাসকিট নষ্ট হলে ইঞ্জিনে কী হয়

১. ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হওয়া: হেড গ্যাসকিট নষ্ট হলে কুল্যান্ট সিস্টেমে সমস্যা দেখা দেয়, যার ফলে ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হতে পারে। এটি ইঞ্জিনের অন্যান্য অংশে ক্ষতি করতে পারে এবং ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা হ্রাস করতে পারে।

২. সাদা ধোঁয়া নির্গমন: হেড গ্যাসকিট নষ্ট হলে কুল্যান্ট কম্বাশন চেম্বারে প্রবেশ করতে পারে, যা সাদা ধোঁয়া হিসেবে এক্সহস্ট পাইপ থেকে নির্গত হয়। এই ধোঁয়া সাধারণত মিষ্টি গন্ধযুক্ত হয়, যা কুল্যান্টের উপস্থিতি নির্দেশ করে।

৩. ইঞ্জিন অয়েলে দুধের মতো রঙ: কুল্যান্ট এবং ইঞ্জিন অয়েল মিশে গেলে অয়েলের রঙ দুধের মতো হয়ে যায়। এটি ইঞ্জিনের লুব্রিকেশন সিস্টেমে সমস্যা সৃষ্টি করে এবং ইঞ্জিনের অভ্যন্তরীণ অংশে ক্ষতি করতে পারে।

আরও পড়ুন: 

৪. ইঞ্জিনের শক্তি হ্রাস: হেড গ্যাসকিট নষ্ট হলে ইঞ্জিনের কম্প্রেশন হ্রাস পায়, যার ফলে ইঞ্জিনের শক্তি কমে যায় এবং গাড়ির পারফরম্যান্স হ্রাস পায়।

৫. কুল্যান্ট বা অয়েল লিক: হেড গ্যাসকিট নষ্ট হলে ইঞ্জিনের বাইরের দিকে কুল্যান্ট বা অয়েল লিক হতে পারে। এটি গাড়ির নিচে তরল পদার্থের পুল তৈরি করতে পারে এবং ইঞ্জিনের অন্যান্য অংশে ক্ষতি করতে পারে।

৬. রেডিয়েটরে বুদবুদ: হেড গ্যাসকিট নষ্ট হলে কম্বাশন গ্যাস কুল্যান্ট সিস্টেমে প্রবেশ করতে পারে, যার ফলে রেডিয়েটরে বুদবুদ দেখা যায়। এটি কুল্যান্ট সিস্টেমে বায়ু প্রবেশের ইঙ্গিত দেয়, যা ইঞ্জিনের অতিরিক্ত গরম হওয়ার কারণ হতে পারে।

৭. চেক ইঞ্জিন লাইট জ্বলে ওঠা: হেড গ্যাসকিট নষ্ট হলে ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়, যার ফলে চেক ইঞ্জিন লাইট জ্বলে ওঠে। এটি ইঞ্জিনের সমস্যার একটি সাধারণ লক্ষণ।

হেড গ্যাসকিট নষ্ট হওয়ার কারণ

  • অতিরিক্ত তাপমাত্রা: ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হলে হেড গ্যাসকিট নষ্ট হতে পারে।
  • অতিরিক্ত চাপ: ইঞ্জিনে অতিরিক্ত চাপ পড়লে গ্যাসকিট ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
  • পুরাতন বা নিম্নমানের গ্যাসকিট: নিম্নমানের বা পুরাতন গ্যাসকিট সহজেই নষ্ট হতে পারে।
  • ইঞ্জিনের অতিরিক্ত ব্যবহার: দীর্ঘ সময় ধরে ইঞ্জিন অতিরিক্ত ব্যবহারে গ্যাসকিট ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ইঞ্জিন হেড গ্যাসকেট পরিবর্তনের খরচ ও প্রক্রিয়া

প্রতিকার ও প্রতিরোধ

  • নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ: ইঞ্জিনের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং কুল্যান্ট লেভেল পর্যবেক্ষণ করা উচিত।
  • উচ্চমানের গ্যাসকিট ব্যবহার: উচ্চমানের গ্যাসকিট ব্যবহার করলে এর স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায়।
  • অতিরিক্ত গরম হওয়া রোধ: ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হলে তাৎক্ষণিকভাবে গাড়ি থামিয়ে সমস্যা নির্ণয় করা উচিত।
  • বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: হেড গ্যাসকিট নষ্ট হলে অভিজ্ঞ মেকানিকের সাহায্য নেওয়া উচিত।
গাড়ির হেড গ্যাসকিট নষ্ট হলে ইঞ্জিনে কী হয়

 

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ)

প্রশ্ন ১: হেড গ্যাসকিট নষ্ট হলে গাড়ি চালানো কি নিরাপদ?

উত্তর: না, হেড গ্যাসকিট নষ্ট হলে গাড়ি চালানো নিরাপদ নয়। এটি ইঞ্জিনের আরও ক্ষতির কারণ হতে পারে।

প্রশ্ন ২: হেড গ্যাসকিট পরিবর্তনের খরচ কত?

উত্তর: হেড গ্যাসকিট পরিবর্তনের খরচ গাড়ির মডেল এবং মেকানিকের চার্জের উপর নির্ভর করে। সাধারণত, এটি একটি ব্যয়বহুল মেরামত।

প্রশ্ন ৩: হেড গ্যাসকিট নষ্ট হওয়ার লক্ষণ কী কী?

উত্তর: ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হওয়া, সাদা ধোঁয়া নির্গমন, ইঞ্জিন অয়েলে দুধের মতো রঙ, ইঞ্জিনের শক্তি হ্রাস, কুল্যান্ট বা অয়েল লিক, রেডিয়েটরে বুদবুদ, এবং চেক ইঞ্জিন লাইট জ্বলে ওঠা।

প্রশ্ন ৪: হেড গ্যাসকিট নষ্ট হওয়া প্রতিরোধ করা যায় কি?

উত্তর: হ্যাঁ, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ, উচ্চমানের গ্যাসকিট ব্যবহার, এবং ইঞ্জিনের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হেড গ্যাসকিট নষ্ট হওয়া প্রতিরোধ করা যায়।

প্রশ্ন ৫: হেড গ্যাসকিট নষ্ট হলে ইঞ্জিনের অন্যান্য অংশে কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে?

উত্তর: হেড গ্যাসকিট নষ্ট হলে ইঞ্জিনের অভ্যন্তরীণ অংশে ক্ষতি, কুল্যান্ট সিস্টেমে সমস্যা, এবং ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা হ্রাস হতে পারে।

উপসংহার

গাড়ির হেড গ্যাসকিট একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। হেড গ্যাসকিট নষ্ট হলে ইঞ্জিনে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা গাড়ির পারফরম্যান্স হ্রাস করে এবং বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই, হেড গ্যাসকিটের সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

আমাদের লোকেশন: আর.এস. ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার 2

Author R.S Driving School 2

আর. এস ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার ২ || দক্ষ ড্রাইভার তৈরিতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। মোবাইলঃ ০১৬৭৫-৫৬৫ ২২২ অফিস ঠিকানাঃ হাউজ-১৫৪/এ, রোড-০২, ব্লক-এ, সেকশন-১২, পল্লবী মিরপুর ঢাকা-১২১৬।

Recent Posts

কারে একাধিক এয়ার ব্যাগ থাকার উপকারিতা – নিরাপত্তার আধুনিক দিক ও কেন আপনার গাড়িতে এটি থাকা উচিত Best

কারে একাধিক এয়ার ব্যাগ থাকার উপকারিতা বর্তমান যুগে গাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগের তুলনায় অনেক উন্নত…

19 hours ago

কার এয়ার ব্যাগ মেরামতের খরচ কত? | বিস্তারিত গাইড ২০২৫ Best tips

বর্তমান যুগে নিরাপদ গাড়ি চলাচলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি হচ্ছে এয়ার ব্যাগ। এটি যেকোনো গাড়ির দুর্ঘটনার…

2 days ago

গাড়ির ব্যাটারি ফুলে যাওয়া ঠেকাতে করণীয় | Best Guide 2025

গাড়ির ব্যাটারি ফুলে যাওয়া ঠেকাতে করণীয়: গাড়ির ব্যাটারি ফুলে যাওয়া একটি গুরুতর সমস্যা, যা এড়াতে…

4 days ago

গিয়ার বক্স কী ও কীভাবে কাজ করে – বিস্তারিত ও সহজ ব্যাখ্যা ২০২৫ Best

গিয়ার বক্স কী ও কীভাবে কাজ করে, কত প্রকার, ম্যানুয়াল ও অটোমেটিক গিয়ারের পার্থক্য এবং…

5 days ago

গাড়ির ব্যাটারি ফুলে যাওয়া প্রতিরোধে কোন কোন সতর্কতা জরুরি | গাড়ির ব্যাটারি রক্ষণাবেক্ষণ Best Guide

গাড়ির ব্যাটারি ফুলে যাওয়া প্রতিরোধে কোন কোন সতর্কতা জরুরি, ব্যাটারি রক্ষণাবেক্ষণ, চার্জিং নিয়ন্ত্রণ, এবং অন্যান্য…

6 days ago

বাংলাদেশে কারের জন্য সেরা এয়ার ব্যাগ ব্র্যান্ড / দাম, গুণমান ও পরামর্শ

বাংলাদেশে কারের জন্য সেরা এয়ার ব্যাগ ব্র্যান্ড, এই ব্লগে Autoliv, Takata, ZF TRW সহ শীর্ষ…

6 days ago