বাংলাদেশে ট্রাফিক আইনে গাড়ি পার্কিং সংক্রান্ত নিয়ম
বাংলাদেশে ট্রাফিক আইনে গাড়ি পার্কিং সংক্রান্ত নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। নির্ধারিত স্থানে পার্কিং, পার্কিং ফি, আইন প্রয়োগ ও সচেতনতা বৃদ্ধির উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা।
১. নির্ধারিত স্থানে পার্কিং বাধ্যতামূলক
গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য কোথাও পার্কিং করা আইনত দণ্ডনীয়। ঢাকা মহানগরীতে যানজট নিরসনে সরকার পার্কিং নীতিমালা প্রণয়ন করেছে, যেখানে বলা হয়েছে যে, পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্থান ছাড়া অন্য কোথাও গাড়ি পার্কিং করা যাবে না। এছাড়া, পার্কিং ফি শহরের বিভিন্ন স্থানের গুরুত্বভেদে ভিন্ন ভিন্ন হবে।
২. অন-স্ট্রিট ও অফ-স্ট্রিট পার্কিং: নীতিমালায় অন-স্ট্রিট পার্কিং (রাস্তার পাশে পার্কিং) ও অফ-স্ট্রিট পার্কিং (নির্ধারিত পার্কিং লটে পার্কিং) এর মধ্যে পার্থক্য করা হয়েছে। অন-স্ট্রিট পার্কিংয়ের ক্ষেত্রে নির্ধারিত স্থানে পার্কিং করতে হবে এবং ফি পরিশোধ করতে হবে। অফ-স্ট্রিট পার্কিংয়ের ক্ষেত্রে মাল্টি-লেভেল বা আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং লট ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ।
৩. পার্কিং ফি নির্ধারণ: পার্কিং ফি নির্ধারণের জন্য পার্কিংয়ের স্থান, সময়, গাড়ির ধরন, নিরাপত্তা, সুবিধাদি, পরিষেবা, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ পিক পিরিয়ড, অফ পিক পিরিয়ড, কর্মদিবস, ছুটির দিন ইত্যাদির জন্য ভিন্ন ভিন্ন পার্কিং ফি নির্ধারণ করতে পারে।
৪. অবৈধ পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: অবৈধ পার্কিং নিয়ন্ত্রণের জন্য ট্রাফিক পুলিশ অননুমোদিত পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। পার্কিং নিয়ন্ত্রণের জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পার্কিং এনফোর্সমেন্ট সেল গঠন করা যেতে পারে ।
আরও পড়ুন: ট্রাফিক বাতির রং কেন লাল হলুদ সবুজ
১. পার্কিং অবকাঠামো উন্নয়ন: সরকারি, করপোরেট ও বেসরকারি খাতের সহযোগিতায় পার্কিং অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। বহুতল ও ভূগর্ভস্থ পার্কিং লট নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া, পার্কিং ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে ।
২. পার্ক অ্যান্ড রাইড সুবিধা: মেট্রোরেল ও রেলওয়ে স্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে ‘পার্ক অ্যান্ড রাইড’ সুবিধা রাখা যেতে পারে। প্রাইভেটকার ব্যবহারকারী এখানে গাড়ি পার্ক করে গণপরিবহনে চড়ে গন্তব্যে যেতে পারবেন ।
৩. পার্কিং ফি আদায় পদ্ধতি: পার্কিং ফি আদায়ের জন্য ইজারাদার বা ঠিকাদার নিয়োগ করা যাবে। তারা কর্তৃপক্ষের হয়ে গাড়ি থেকে ফি আদায় করবে এবং স্বচ্ছ পার্কিং ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করবে ।
১. পার্কিং সংক্রান্ত অপরাধের শ্রেণীবিভাগ: ট্রাফিক আইনে পার্কিং সংক্রান্ত অপরাধগুলোকে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে। যেমন:
ক শ্রেণী: নিষিদ্ধ স্থানে পার্কিং বা অন্য গাড়ির চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা।
খ শ্রেণী: ডাবল পার্কিং বা অনুমোদিত স্থানে পার্কিং না করা।
গ শ্রেণী: গাড়ির রেজিস্ট্রেশন বা ফিটনেস সনদ হালনাগাদ না থাকা।
২. জরিমানার পরিমাণ: অপরাধের ধরন অনুযায়ী জরিমানার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, নিষিদ্ধ স্থানে পার্কিং করলে ‘ক’ শ্রেণীর অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়ে জরিমানা হতে পারে ।
আরও পড়ুন: ট্রাফিক আইনের উদ্দেশ্য কী
১. চালক ও যাত্রীদের সচেতনতা: গাড়ি চালক ও যাত্রীদের ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতন করা জরুরি। নির্ধারিত স্থানে পার্কিং, পার্কিং ফি পরিশোধ এবং ট্রাফিক নির্দেশনা মেনে চলা সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।
২. গণমাধ্যম ও সামাজিক প্রচারণা: গণমাধ্যম ও সামাজিক প্রচারণার মাধ্যমে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। এতে করে মানুষ আইন মেনে চলতে উৎসাহিত হবে।
১. নির্ধারিত স্থানে পার্কিং না করলে কী ধরনের শাস্তি হতে পারে?
উত্তরঃ নির্ধারিত স্থানে পার্কিং না করলে ‘ক’ শ্রেণীর অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়ে জরিমানা হতে পারে।
২. পার্কিং ফি কীভাবে নির্ধারণ করা হয়?
উত্তরঃপার্কিং ফি নির্ধারণের জন্য পার্কিংয়ের স্থান, সময়, গাড়ির ধরন, নিরাপত্তা, সুবিধাদি, পরিষেবা, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়।
৩. অন-স্ট্রিট ও অফ-স্ট্রিট পার্কিংয়ের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তরঃ অন-স্ট্রিট পার্কিং হলো রাস্তার পাশে পার্কিং, যেখানে নির্ধারিত স্থানে পার্কিং করতে হয় এবং ফি পরিশোধ করতে হয়। অফ-স্ট্রিট পার্কিং হলো নির্ধারিত পার্কিং লটে পার্কিং, যেমন মাল্টি-লেভেল বা আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং লট।
৪. পার্কিং ফি কীভাবে পরিশোধ করা যায়?
উত্তরঃ পার্কিং ফি নগদ প্রদান না করে ‘পার্কিং চার্জেজ ব্যারিয়ার’ এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আদায় করা যেতে পারে।
৫. অবৈধ পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়?
উত্তরঃ অবৈধ পার্কিং নিয়ন্ত্রণের জন্য ট্রাফিক পুলিশ অননুমোদিত পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। পার্কিং নিয়ন্ত্রণের জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পার্কিং এনফোর্সমেন্ট সেল গঠন করা যেতে পারে।
বাংলাদেশে ট্রাফিক আইন ও পার্কিং নীতিমালা সড়ক নিরাপত্তা ও যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নির্ধারিত স্থানে পার্কিং, পার্কিং ফি পরিশোধ এবং ট্রাফিক নির্দেশনা মেনে চলা আমাদের সকলের দায়িত্ব। সচেতনতা ও আইন মেনে চলার মাধ্যমে আমরা একটি সুশৃঙ্খল সড়ক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি।
কারে একাধিক এয়ার ব্যাগ থাকার উপকারিতা বর্তমান যুগে গাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগের তুলনায় অনেক উন্নত…
বর্তমান যুগে নিরাপদ গাড়ি চলাচলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি হচ্ছে এয়ার ব্যাগ। এটি যেকোনো গাড়ির দুর্ঘটনার…
গাড়ির ব্যাটারি ফুলে যাওয়া ঠেকাতে করণীয়: গাড়ির ব্যাটারি ফুলে যাওয়া একটি গুরুতর সমস্যা, যা এড়াতে…
গিয়ার বক্স কী ও কীভাবে কাজ করে, কত প্রকার, ম্যানুয়াল ও অটোমেটিক গিয়ারের পার্থক্য এবং…
গাড়ির ব্যাটারি ফুলে যাওয়া প্রতিরোধে কোন কোন সতর্কতা জরুরি, ব্যাটারি রক্ষণাবেক্ষণ, চার্জিং নিয়ন্ত্রণ, এবং অন্যান্য…
বাংলাদেশে কারের জন্য সেরা এয়ার ব্যাগ ব্র্যান্ড, এই ব্লগে Autoliv, Takata, ZF TRW সহ শীর্ষ…
View Comments