Categories: Mobile Banking

বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং কয়টি ও কি কি || Mobile Banking BD

বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং কয়টি ও কি কি: বাংলাদেশে বর্তমানে ছয়টি প্রধান মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু রয়েছে, যা দেশের ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করেছে। মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারের ফলে মানুষ দ্রুত ও নিরাপদে লেনদেন করতে পারছে।

বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং কয়টি ও কি কি

বাংলাদেশে বর্তমানে বেশ কয়েকটি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু রয়েছে, যা দেশের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থাকে আরও সহজ করে তুলেছে। মোবাইল ব্যাংকিং সেবাগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত এবং দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অধীনে পরিচালিত হয়। বর্তমানে প্রধান মোবাইল ব্যাংকিং সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে বিকাশ, নগদ, রকেট, উপায়, এমক্যাশ এবং ট্যাপ।

প্রত্যেকটি মোবাইল ব্যাংকিং প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব বিশেষত্ব রয়েছে এবং তারা ভিন্ন ভিন্ন ব্যাংকের অধীনে পরিচালিত হয়। বিকাশ ব্র্যাক ব্যাংকের আওতায়, নগদ ডাক বিভাগের মাধ্যমে পরিচালিত, রকেট ডাচ-বাংলা ব্যাংকের অধীনে, উপায় ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের, এমক্যাশ মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের, এবং ট্যাপ প্রাইম ব্যাংকের একটি ডিজিটাল ব্যাংকিং প্ল্যাটফর্ম।

মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য হলো মানুষের জন্য আর্থিক সেবা সহজতর করা, যাতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগণও এই সেবা গ্রহণ করতে পারেন। ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে এবং মোবাইল ব্যাংকিং প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে এর ব্যবহার আরও বাড়বে।

বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং কয়টি ও কি কি

 

মোবাইল ব্যাংকিং কি?

মোবাইল ব্যাংকিং হলো একটি ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা, যা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে পরিচালিত হয়। এটি মূলত ব্যাংকিং কার্যক্রমকে সহজ, দ্রুত এবং আরও নিরাপদ করে তুলেছে। আগে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যাংকে যেতে হতো, কিন্তু বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসেই লেনদেন করা যায়। বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং কয়টি ও কি কি

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠানো, বিল পরিশোধ, ক্যাশ আউট, অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স চেকসহ আরও অনেক কিছু করা যায়। বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং চালুর ফলে বিশেষ করে গ্রামের সাধারণ মানুষ এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ব্যাংকিং সুবিধা সহজে গ্রহণ করতে পারছেন। পাশাপাশি, এটি সময় ও খরচ বাঁচায়, কারণ ব্যাংকের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন হয় না।

বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েকটি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা রয়েছে, যা সাধারণ জনগণের জন্য সুবিধাজনক। মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারের জন্য একটি মোবাইল নাম্বার এবং নির্ধারিত অ্যাকাউন্ট থাকা আবশ্যক। সঠিকভাবে মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারের মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী সহজেই তার আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করতে পারেন, যা দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি বড় ধাপ।

বিকাশ (bKash)

বিকাশ হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা, যা ব্র্যাক ব্যাংকের অধীনে পরিচালিত হয়। ২০১১ সালে চালু হওয়ার পর থেকে এটি দেশের মোবাইল ব্যাংকিং খাতে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানো, ক্যাশ আউট, বিল পরিশোধ, অনলাইন কেনাকাটা এবং অন্যান্য ব্যাংকিং সুবিধা পাওয়া যায়।

বিকাশের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর ব্যাপক নেটওয়ার্ক। দেশের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে বিকাশ এজেন্ট পাওয়া যায়, যা গ্রাহকদের লেনদেনের জন্য সুবিধাজনক। বিকাশ অ্যাপে ব্যবহারকারীরা সরাসরি ব্যাংক থেকে টাকা জমা ও উত্তোলন করতে পারেন। এছাড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফি পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ এবং বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা যায়।

নিরাপত্তার দিক থেকে বিকাশ উন্নত মানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যবহার করে। প্রতিটি লেনদেনের জন্য পিন নম্বর ব্যবহার করতে হয়, যা গ্রাহকের একান্ত ব্যক্তিগত। এছাড়া, অ্যাপে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ফেস আইডি শনাক্তকরণের সুবিধাও রয়েছে, যা নিরাপত্তাকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।

আরও পড়ুন: কিভাবে 10টি ধাপে একটি অনলাইন ব্যবসা বাড়ানো যায়

নগদ (Nagad)

নগদ হলো বাংলাদেশ ডাক বিভাগের অধীনে পরিচালিত একটি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। এটি ২০১৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয় এবং দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করে। নগদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এটি অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং সেবার তুলনায় কম খরচে লেনদেনের সুবিধা প্রদান করে।

নগদ ব্যবহারকারীরা খুব সহজেই তাদের মোবাইল অ্যাপ বা ইউএসএসডি কোডের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে, ক্যাশ আউট করতে, বিল পরিশোধ করতে এবং অনলাইন কেনাকাটা করতে পারেন। এছাড়া, নগদ একটি বিশেষ সুবিধা প্রদান করে, যেখানে মোবাইল নম্বরের মাধ্যমেই অ্যাকাউন্ট খোলা যায়।

নিরাপত্তার দিক থেকে নগদ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যা গ্রাহকদের জন্য আরও সুরক্ষিত। প্রতিটি লেনদেনের জন্য OTP ও PIN ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। এছাড়া, নগদের ইন্টারফেস খুব সহজ এবং ব্যবহারবান্ধব, যা নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক।

রকেট (Rocket)

ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা রকেট, যা দেশের অন্যতম প্রধান ডিজিটাল লেনদেন মাধ্যম। এটি ২০১১ সালে চালু হয় এবং বাংলাদেশের অন্যতম পুরোনো মোবাইল ব্যাংকিং সেবা হিসেবে পরিচিত।

রকেটের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন, টাকা পাঠানো, বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ এবং অন্যান্য ডিজিটাল ব্যাংকিং সুবিধা নিতে পারেন। রকেটের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটি ডাচ-বাংলা ব্যাংকের একাউন্টের সাথে সরাসরি সংযুক্ত থাকতে পারে, যা গ্রাহকদের জন্য বাড়তি সুবিধা প্রদান করে।

নিরাপত্তার ক্ষেত্রে রকেট অত্যন্ত শক্তিশালী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। প্রতিটি লেনদেনের জন্য নিরাপত্তামূলক পদ্ধতি যেমন OTP এবং PIN নিশ্চিত করা হয়, যা ব্যবহারকারীর অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। এছাড়া, অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা সহজেই তাদের ট্রানজ্যাকশন হিস্টোরি দেখতে পারেন।

আরও পড়ুন: অনলাইন বিজনেস শুরু করার ৭ টি সিক্রেট ফর্মুলা 2025

বাংলাদেশের জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা

১. বিকাশ (bKash): বিকাশ বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা, যা ব্র্যাক ব্যাংকের অধীনে পরিচালিত। এটি ব্যবহার করে সহজেই টাকা পাঠানো, বিল পরিশোধ ও কেনাকাটা করা যায়। বিকাশের নিরাপত্তা, দ্রুত লেনদেন ও ব্যাপক এজেন্ট নেটওয়ার্ক একে শীর্ষস্থানে নিয়ে গেছে।

২. নগদ (Nagad): বাংলাদেশ ডাক বিভাগের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত নগদ, কম খরচে দ্রুত লেনদেনের সুবিধা দেয়। নগদের মাধ্যমে সরকারি ভাতা গ্রহণ, বিল পরিশোধ ও মোবাইল রিচার্জ সহজে করা যায়।

৩. রকেট (Rocket): ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এই মোবাইল ব্যাংকিং সেবাটি ব্যাংক লিংক সুবিধার জন্য জনপ্রিয়। রকেটের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ATM থেকে ক্যাশ আউট, বিল পেমেন্ট ও সরাসরি ব্যাংক ট্রান্সফার করতে পারেন।

৪. উপায় (Upay): উপায় ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (UCB) মোবাইল ব্যাংকিং সেবা, যা বিশেষভাবে ব্যবসায়ীদের জন্য উপযোগী। এর মাধ্যমে দ্রুত ও সহজে লেনদেন, বিল পরিশোধ ও ই-কমার্স পেমেন্ট করা যায়।

৫. এমক্যাশ (mCash): মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (MTB) এমক্যাশ, নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংকিং সুবিধার জন্য ব্যবহৃত হয়। এর মাধ্যমে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন, মোবাইল রিচার্জ ও কেনাকাটা করা সম্ভব।

৬. ট্যাপ (Tap): প্রাইম ব্যাংকের ডিজিটাল মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ট্যাপ, ব্যবসায়ীদের জন্য উন্নত সুবিধা দেয়। এটি নিরাপত্তা ও দ্রুত লেনদেনের কারণে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে

বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং কয়টি ও কি কি

 

উপসংহার

বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং কয়টি ও কি কি বাংলাদেশে বর্তমানে ছয়টি প্রধান মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু রয়েছে, যা দেশের ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করেছে। মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারের ফলে মানুষ দ্রুত ও নিরাপদে লেনদেন করতে পারছে। ভবিষ্যতে এই সেবা আরও বিস্তৃত হয়ে উঠবে এবং ব্যাংকিং সেক্টরে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে।

Author R.S Driving School 2

আর. এস ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার ২ || দক্ষ ড্রাইভার তৈরিতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। মোবাইলঃ ০১৬৭৫-৫৬৫ ২২২ অফিস ঠিকানাঃ হাউজ-১৫৪/এ, রোড-০২, ব্লক-এ, সেকশন-১২, পল্লবী মিরপুর ঢাকা-১২১৬।

View Comments

Recent Posts

শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার নিয়ম 2025 | Driving License

শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স (Driving License) হলো নতুন চালকদের জন্য গাড়ি চালানোর অনুমতিপত্র, যা মূল ড্রাইভিং…

1 week ago

অল্প পুজিতে পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া | Wholesale Business Ideas

অল্প পুজিতে পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া Wholesale Business Ideas with Small Capital অল্প পুঁজিতে পাইকারি ব্যবসা…

1 week ago

উৎপাদনমুখী ব্যবসা ৫০০০ টাকায় || Manufacturing business

Manufacturing business উৎপাদনমুখী ব্যবসা ৫০০০ টাকায় শুরু করা এখন সহজ এবং লাভজনক!  মাত্র ৫০০০ টাকা…

1 week ago

অল্প পুঁজিতে ১০টি সেরা পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া | Low Investment Wholesale Business Ideas

অল্প পুঁজিতে ১০টি সেরা পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া। আপনি যদি কম পুঁজিতে একটি লাভজনক পাইকারি ব্যবসা…

2 weeks ago

সেহরির শেষ সময় কিভাবে নির্ধারণ করা হয়?

সেহরির শেষ সময় কিভাবে নির্ধারণ করা হয়? সুবহে সাদিক, ফজরের আজান ও ইসলামিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী…

2 weeks ago

২০ হাজার টাকায় ২৫ টি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া | Best Business Ideas 2025

আপনি কি কম পুঁজিতে ব্যবসা শুরু করতে চান? জানুন২০ হাজার টাকায় ২৫ টি লাভজনক ব্যবসার…

2 weeks ago