গাড়ির ড্যাশবোর্ডে কী কী ইন্সট্রুমেন্ট থাকে

গাড়ির ড্যাশবোর্ডে কী কী ইন্সট্রুমেন্ট থাকে ড্যাশবোর্ডে থাকা স্পিডোমিটার, ট্যাকোমিটার, ফুয়েল গেজ, অয়েল প্রেসার গেজ সহ গুরুত্বপূর্ণ ইন্সট্রুমেন্টগুলো সম্পর্কে জানুন। এগুলো গাড়ির পারফরম্যান্স এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।

গাড়ির ড্যাশবোর্ডে কী কী ইন্সট্রুমেন্ট থাকে 

গাড়ি চালানোর সময় ড্যাশবোর্ডের ইন্সট্রুমেন্টগুলো আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো আমাদের গাড়ির অবস্থা সম্পর্কে নানা তথ্য সরবরাহ করে, যা নিরাপদ এবং সঠিকভাবে গাড়ি চালানোর জন্য অপরিহার্য। তবে, অনেক সময় নতুন ড্রাইভাররা এই ইন্সট্রুমেন্টগুলো সম্পর্কে বেশি জানেন না। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানব, গাড়ির ড্যাশবোর্ডে কী কী ইন্সট্রুমেন্ট থাকে এবং এগুলোর কাজ কী।

স্পিডোমিটার (Speedometer) 

স্পিডোমিটার হল সেই ইন্সট্রুমেন্ট যা গাড়ির গতির পরিমাপ করে। এটি গাড়ির ড্যাশবোর্ডের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর মধ্যে একটি। সাধারণত, এটি মাইল বা কিলোমিটারে গতি দেখায়। স্পিডোমিটার আমাদের জানায় আমরা কতটা দ্রুত গাড়ি চালাচ্ছি, যাতে আমরা ট্রাফিক আইন অনুসরণ করতে পারি এবং নিরাপদে গাড়ি চালাতে পারি।

গাড়ির ড্যাশবোর্ডে কী কী ইন্সট্রুমেন্ট থাকে
গাড়ির ড্যাশবোর্ডে কী কী ইন্সট্রুমেন্ট থাকে

 

ট্যাকোমিটার (Tachometer) 

ট্যাকোমিটার ইঞ্জিনের রেভোলিউশন পার মিনিট (RPM) পরিমাপ করে। এটি ইঞ্জিনের গতি বোঝাতে সাহায্য করে। যদি ট্যাকোমিটার খুব বেশি বা খুব কম থাকে, তবে ইঞ্জিনে সমস্যা হতে পারে। এই মিটারটি বিশেষ করে গাড়ির সঠিক পারফরম্যান্স এবং ইঞ্জিনের স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানায়।

ফুয়েল গেজ (Fuel Gauge) 

ফুয়েল গেজ আমাদের জানায় গাড়ির ট্যাঙ্কে কতটা তেল আছে। এই ইন্সট্রুমেন্টটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আমাদেরকে তেলের স্তরের সম্পর্কে সতর্ক করে। যদি ফুয়েল গেজ পুরোপুরি শূন্য হয়ে যায়, তাহলে গাড়ি বন্ধ হয়ে যেতে পারে, তাই ফুয়েল গেজ দেখে তেল শেষ হওয়ার আগেই পেট্রোল পাম্পে থামা উচিত।

ওয়াটার টেম্পারেচার গেজ (Water Temperature Gauge) 

গাড়ির ইঞ্জিনের তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে এই গেজটি ব্যবহৃত হয়। যদি তাপমাত্রা অত্যাধিক বেড়ে যায়, তবে ইঞ্জিনের খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাপমাত্রা খুব বেশি হলে গাড়ির ইঞ্জিনে সমস্যা হতে পারে, তাই ওয়াটার টেম্পারেচার গেজ সবসময় পর্যবেক্ষণ করা জরুরি।

আরও পড়ুন: হঠাৎ গাড়ির ব্রেক ফেল হলে কী করবেন

 

ব্যাটারি ভোল্টেজ গেজ (Battery Voltage Gauge) 

এই গেজটি ব্যাটারির শক্তি পরিমাপ করে। যদি এটি নিচে নামতে থাকে, তবে ব্যাটারির চার্জ কমে যাচ্ছে বা ব্যাটারি সিস্টেমে সমস্যা হতে পারে। নিয়মিতভাবে এটি পর্যবেক্ষণ করলে ব্যাটারি খারাপ হওয়া থেকে আগে থেকেই সতর্ক হওয়া যায়।

 অয়েল প্রেসার গেজ (Oil Pressure Gauge) 

অয়েল প্রেসার গেজ ইঞ্জিন অয়েলের চাপ পরিমাপ করে। গাড়ির ইঞ্জিনে যদি অয়েল চাপ কমে যায়, তবে ইঞ্জিনে ক্ষতি হতে পারে। এই গেজটি আপনাকে জানাবে কখন অয়েল চেক করার সময় এসেছে এবং এটি ইঞ্জিনের দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

হেডলাইট সিগন্যাল (Headlight Signal) 

গাড়ির ড্যাশবোর্ডে একটি ছোট্ট হেডলাইট সিগন্যাল থাকে, যা জানায় আপনি হেডলাইট ব্যবহার করছেন কিনা। এটি রাতের বেলায় বিশেষভাবে কাজে আসে, কারণ এতে আপনি জানতে পারবেন যে আপনার হেডলাইট চালু আছে কিনা।

এয়ারব্যাগ সিগন্যাল (Airbag Signal) 

গাড়ির ড্যাশবোর্ডে একটি এয়ারব্যাগ সিগন্যাল থাকে, যা জানায় যে আপনার গাড়ির এয়ারব্যাগ সিস্টেম সক্রিয় আছে কিনা। যদি এটি অকার্যকর হয়ে যায়, তবে সিস্টেমের ত্রুটি রয়েছে এবং এটি দুর্ঘটনায় সুরক্ষা প্রদান করতে পারবে না।

ABS সিগন্যাল (ABS Signal) 

অ্যান্টি-লক ব্রেকিং সিস্টেম (ABS) সিগন্যালটি আমাদের জানায় যে গাড়ির ব্রেক সিস্টেম সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ খারাপ ABS সিস্টেমের ফলে গাড়ি স্লিপ বা লক হয়ে যেতে পারে, যা দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বাড়ায়।

ওডোমিটার (Odometer)

ওডোমিটার গাড়ির মোট চলাচল করা দূরত্ব পরিমাপ করে। এটি আপনাকে জানায়, আপনি গাড়িটিতে এখন পর্যন্ত কত কিলোমিটার বা মাইল চালিয়েছেন। এই তথ্যটি সার্ভিসিং এবং গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

ডোর ওপেন সিগন্যাল (Door Open Signal) 

যদি গাড়ির কোনো দরজা খুলে থাকে, তবে ড্যাশবোর্ডে একটি সিগন্যাল জ্বলে ওঠে। এটি ড্রাইভারের জন্য সতর্কবাণী, যাতে গাড়ি চালানোর আগে সব দরজা সঠিকভাবে বন্ধ করা থাকে।

আরও পড়ুন: নতুন চালকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ১৩টি ড্রাইভিং টিপস

 

স্টিয়ারিং হুইল কন্ট্রোল (Steering Wheel Control) 

গাড়ির ড্যাশবোর্ডে অনেকসময় স্টিয়ারিং হুইল কন্ট্রোল থাকে, যার মাধ্যমে আপনি গাড়ির কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফিচার যেমন ভয়েস কন্ট্রোল, মিডিয়া কন্ট্রোল এবং ক্রুজ কন্ট্রোল পরিচালনা করতে পারেন। এটি ড্রাইভিংকে আরও সহজ ও নিরাপদ করে।

ডিফগার সিগন্যাল (Defogger Signal) 

ডিফগার সিগন্যালটি জানায় যখন গাড়ির জানালা বা উইন্ডশিল্ডে কুয়াশা বা বরফ জমে যায়, তখন ডিফগার সিস্টেম সক্রিয় করা হয়। এটি গাড়ির অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।

উপসংহার

গাড়ির ড্যাশবোর্ডে থাকা এই ইন্সট্রুমেন্টগুলো শুধু গাড়ির কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তা সম্পর্কে তথ্য দেয় না, বরং সেগুলো আমাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর পথে আরও বেশি সচেতন ও সতর্ক করে। একে অপরের কাজের প্রতি খেয়াল রাখলে, গাড়ি চালানো হবে আরও নিরাপদ এবং সঠিক।

এখন, আপনি যদি গাড়ির ড্যাশবোর্ডের ইন্সট্রুমেন্টগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন, তবে এটি আপনার ড্রাইভিং অভিজ্ঞতাকে আরও সুরক্ষিত এবং আনন্দদায়ক করবে।

আর. এস ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার ২ || দক্ষ ড্রাইভার তৈরিতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। মোবাইলঃ ০১৬৭৫-৫৬৫ ২২২ অফিস ঠিকানাঃ হাউজ-১৫৪/এ, রোড-০২, ব্লক-এ, সেকশন-১২, পল্লবী মিরপুর ঢাকা-১২১৬।

Sharing Is Caring:

Leave a Comment

01675565222