জন্ম নিবন্ধন দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৫: বাংলাদেশে বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য জন্ম নিবন্ধন একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি। ২০২৫ সালে এই প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত করা হয়েছে। প্রথমে, আপনার জন্ম নিবন্ধনের কপি সংগ্রহ করুন। তারপর, বিকাশের নিকটবর্তী কেন্দ্রে যান এবং আবেদন ফরম পূরণ করুন। ফরমে আপনার জন্ম নিবন্ধনের তথ্য সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে। পরবর্তী ধাপে, পরিচয় যাচাইয়ের জন্য আপনার ফটো এবং মোবাইল নম্বর দিন। সমস্ত তথ্য সঠিক থাকলে, আপনার বিকাশ একাউন্ট খুলে দেওয়া হবে। এই প্রক্রিয়ায় সাহায্য পেতে, বিকাশের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা কাস্টমার সার্ভিসে যোগাযোগ করুন।

জন্ম নিবন্ধন দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৫
বর্তমানে বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা অত্যন্ত জনপ্রিয়, এবং বিকাশ অন্যতম প্রধান মোবাইল ব্যাংকিং প্ল্যাটফর্ম। সাধারণত, বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) প্রয়োজন হয়। তবে অনেক মানুষ, বিশেষ করে অপ্রাপ্তবয়স্ক বা যারা এখনো NID পাননি, তারা জন্ম নিবন্ধন সনদ ব্যবহার করে বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান। ২০২৫ সালে জন্ম নিবন্ধন দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে এই আর্টিকেলে।
বিকাশ একাউন্ট খুলতে কী কী প্রয়োজন?
বিকাশ একাউন্ট খুলতে নির্দিষ্ট কিছু ডকুমেন্ট ও তথ্য প্রদান করা বাধ্যতামূলক। সাধারণত, জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) ছাড়া বিকাশ একাউন্ট খোলা সম্ভব নয়। তবে ২০২৫ সালে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে, যার মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার করেও বিকাশ একাউন্ট খোলা যাবে। একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
প্রথমত, জন্ম নিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক হতে হবে। এটি শুধুমাত্র সরকারি নিবন্ধিত অনলাইন জন্ম নিবন্ধন হতে হবে। হাতে লেখা বা পুরোনো নিবন্ধন গ্রহণযোগ্য নয়। দ্বিতীয়ত, আবেদনকারীর একটি সক্রিয় মোবাইল নম্বর থাকতে হবে, যা বিকাশের সাথে সংযুক্ত করা হবে। তৃতীয়ত, অভিভাবকের জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) ও মোবাইল নম্বর জমা দিতে হবে, কারণ জন্ম নিবন্ধনধারীদের একাউন্ট অভিভাবকের অনুমোদন সাপেক্ষে খোলা হবে।
এছাড়া, নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন করা হতে পারে, যা আঙ্গুলের ছাপ বা মুখ স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং কয়টি ও কি কি
জন্ম নিবন্ধন দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৫
যারা এখনো NID পাননি, তারা নির্দিষ্ট কিছু শর্ত মেনে জন্ম নিবন্ধন দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারেন। প্রক্রিয়াটি নিচে ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করা হলো:
১. নিকটস্থ বিকাশ এজেন্ট বা কাস্টমার কেয়ারে যাওয়া: বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য প্রথম ধাপ হলো নিকটস্থ বিকাশ এজেন্ট বা কাস্টমার কেয়ারে যাওয়া। এজেন্ট বা কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে জন্ম নিবন্ধন দিয়ে একাউন্ট খোলার অনুরোধ করতে হবে। বিকাশের নির্দিষ্ট কিছু আউটলেট এবং শাখা এই পরিষেবা প্রদান করে।
২. প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দেওয়া: এজেন্টের কাছে আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ ও অভিভাবকের NID জমা দিতে হবে। এই ডকুমেন্ট যাচাইয়ের পর, বিকাশ সার্ভারে তথ্য আপলোড করা হবে। যদি আপনার জন্ম নিবন্ধন অনলাইনভিত্তিক না হয়, তবে সেটি গ্রহণ করা হবে না। এছাড়া, অভিভাবকের সম্মতিও নেওয়া হবে।
৩. বিকাশ একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন ফর্ম পূরণ: বিকাশ এজেন্ট বা কাস্টমার কেয়ারে গেলে আপনাকে একটি রেজিস্ট্রেশন ফর্ম পূরণ করতে হবে, যেখানে আপনার জন্ম নিবন্ধনের তথ্য, নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য বিবরণ লিখতে হবে। ফর্মের প্রতিটি তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে, কারণ ভুল তথ্য প্রদান করলে একাউন্ট বাতিল হয়ে যেতে পারে।
৪. মোবাইল নম্বর যাচাই ও OTP কোড প্রবেশ: আপনার মোবাইল নম্বরে একটি ওটিপি (OTP) কোড পাঠানো হবে, যা এজেন্টকে দেখাতে হবে। এই ওটিপি যাচাইয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে যে একাউন্টের মালিক আপনি নিজেই।
৫. অভিভাবকের সম্মতি গ্রহণ: যেহেতু জন্ম নিবন্ধন দিয়ে একাউন্ট খুলতে হলে প্রাপ্তবয়স্ক অভিভাবকের অনুমতি প্রয়োজন, তাই অভিভাবকের NID যাচাই করা হবে এবং তারা একাউন্ট তৈরির অনুমতি দেবেন।
৬. বায়োমেট্রিক যাচাই (যদি প্রযোজ্য হয়): রবিকাশ ২০২৫ সালে নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করতে পারে, যেখানে মুখ স্ক্যানিং বা আঙ্গুলের ছাপ যাচাই করা হতে পারে। এটি বিশেষ করে ১৮ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
৭. একাউন্ট অ্যাক্টিভেশন: সব কিছু ঠিক থাকলে, কিছুক্ষণ পরেই আপনার বিকাশ একাউন্ট চালু হয়ে যাবে এবং আপনি লেনদেন শুরু করতে পারবেন।
বিকাশ একাউন্ট খোলার পর করণীয়
একাউন্ট খোলার পর কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হবে:
- পিন কোড সেট করুন – লেনদেনের নিরাপত্তার জন্য ৫ ডিজিটের পিন সেট করতে হবে।
- একাউন্ট ভেরিফাই করুন – বিকাশ অ্যাপে লগইন করে একাউন্টের তথ্য যাচাই করুন।
- টাকা জমা করুন – একাউন্ট চালু হয়ে গেলে নিকটস্থ বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে টাকা জমা দিতে পারেন।
- লেনদেনের সীমা বুঝে নিন – জন্ম নিবন্ধন দ্বারা খোলা একাউন্টের লেনদেন সীমিত থাকতে পারে।
জন্ম নিবন্ধন দিয়ে একাউন্ট খোলার শর্তাবলী
- আবেদনকারীর বয়স ১০ বছর বা তার বেশি হতে হবে।
- অভিভাবকের সম্মতি ও NID থাকা বাধ্যতামূলক।
- নির্দিষ্ট কিছু লেনদেন সীমাবদ্ধ থাকতে পারে (যেমন, উচ্চমূল্যের ট্রানজেকশন)।
- বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, পরবর্তী সময়ে NID দিয়ে একাউন্ট আপগ্রেড করতে হতে পারে।
উপসংহার
জন্ম নিবন্ধন দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৫ সালে সহজ হলেও কিছু শর্ত মেনে চলতে হবে। অভিভাবকের অনুমতি ও নির্দিষ্ট লেনদেন সীমার মধ্যে একাউন্ট ব্যবহার করা যাবে। এটি বিশেষ করে অল্পবয়সীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা, যা অর্থনৈতিক লেনদেনে সহজতা আনবে। আশা করি এই গাইড আপনাকে সাহায্য করবে।